নীল শার্ট
|অগোছালো ঘরটায় কোথাও টেবিল ল্যাম্প কোথাও টেবিল ফ্যান, আবার কোথাও পানিও জগ। এলোমেলো পরিবেশটা যেনো গায়ে বসে গেছে সাজুর। চিন্তা মগ্ন হয়ে সাজু বিছানায় শুয়ে ছাঁদের দিকে তাকিয়ে পলকহীন কি যেনো আঁকিবুকি করছে। এ যে জট মেলানোর চিন্তা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হঠাৎ বিছানায় বালিশের পাশে রাখা ফোনের রিংটোনে হকচকিয়ে বিছানায় উঠে বসল সে। ববির বাড়ি থেকে ফোন। ববি সাজুর বান্ধবী; ওরা একই ক্লাসে পড়ে। কয়েকদিন আগে একটা র্দূঘটনায় ববির মৃত্যু হয়। মৃত্যুটাকে সে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না। ফোন ধরলো সাজু, ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ববির মায়ের কন্ঠস্বর “সাজু আমাদের বাড়িতে একটু আসো পুলিশ এসেছে। লাফ দিয়ে উঠে ববির বাড়ি খুব দূরে না হওয়ায় হেঁটেই রওনা দিলো সে। সাজু বাংলা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং সাথে অসাধারণ আলোকচিত্রী, সাংবাদিক এবং ক্ষুদে গোয়েন্দা হিসেবেও বন্ধু মহলে খ্যাতি রয়েছে। ববি কয়েকদিন আগে ছাদ থেকে পড়ে মারা যায়, লাশ দেখে সাজু বলেছিলো এটা আত্মহত্যা নয় খুন। শুরুতে ওর কথাকে কেউ পাত্তা দেয় নি। পুলিশ লাশের পাশে পাওয়া প্রমাণাদি হিসেবে পেয়েছিলো একটি রক্তমাখা হলুদ গোলাপ, একটি ফিতা ছেড়া ডিজিটাল SunStar ঘড়ি, ববির মোবাইল এবং একটি ছেড়া নীল শার্টের হাতা। অনেকের ধারণা ববি ছাঁদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে কিন্তু সাজু বিশ্বাস করে যে ববিকে কেউ খুন করেছে। সাজু এই মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই রফিককে সেকথা জানালে তেমন কোনো সুবিধা হয়নি, উল্টো তিনি সাজুকে বলেন “তুমি ছোট ছেলে ছোটই থাকো এসব ব্যাপারে নাক গলিয়ো না।” কিন্তু আজ আবার সাজুকে ডাকা হলো কেন সে বুঝে উঠতে পারছে না। ভাবছে আর হাঁটছে, এতোক্ষণে ববির বাড়িতে পৌঁছেছে সাজু। ড্রয়িংরুমে ঢুকতেই হাস্যেজ্বল মোটা পরুষালি কন্ঠের এক হোমরা চোমরা লোক সাজুর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে উঠলো “স্বাগতম মি. ডিটেকটিভ।” হঠাৎ এমন সম্ভাষণের কারণ বুঝতে পারা গেলো না তাও আবার এমন শোকাতুর মুর্হুতে। লোকটির জামাতে ইংরেজীতে ডিবি লেখা দেখে বোঝা গেলো তাঁর সম্মুখ পরিচয়। করমর্দন করতে করতে লোকটি রাজু বলে তার পরিচয় দিলো, সাজুও রীতিমত পরিচয় পর্বের কাজ শেষ করলো। জানা গেলো তিনি এ কেসের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ববির মা-বাবার অনুরোধে সরকারিভাবে তদন্তে এসেছেন তিনি। সাজুর জিজ্ঞাসা “পুলিশ কি করলো?” উত্তরে রাজু বলে উঠলো মশাই ডিবিরাও তো পুলিশই তাইনা? কথা না বাড়িয়ে সাজু জানতে চাইলো আচ্ছা ঠিক আছে, বলুন কিভাবে সাহায্য করতে পারি।
ববির মায়ের কাছে শুনলাম আপনারা ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন সাথে গোয়েন্দাও তাই আমি চাইবো আপনি আমাকে সর্বাত্বক সাহায্য করুন।– ডিবি অফিসার বলল । “হুমম, বুঝলাম, বলে সাজু একটু দম নিলো; পরক্ষণে আবার সাজু বলে উঠলো কিন্তু একটা শর্ত আছে। “তা শর্তটা কি মশাই”-রাজুর জিজ্ঞাসা। সাজু বলল আমাকে আমার মতো করে কাজ করতে দিতে হবে। রাজু মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন। এমন প্রস্তাবের জন্য সাজু প্রস্তুতই ছিলো মনে প্রাণে চাইছিলো সে যে এমন কিছু একটা হোক। সাজু বলল চলুন যেখানে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা একবার দেখে আসা যাক। কথা শেষ না হতেই হঠাৎ বেলি ফুলে একটা গন্ধ নাকে আসলো সাজুর, গন্ধটা বেশ কড়া; কিন্তু এ বাড়ি তে এমন গন্ধ! যাইহোক এখন এসব ভাববার সময় নয়। গন্ধ এড়িয়ে ববির মা-বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে লালমনি কলেজের দিকে রওনা হলো দুজন।
কলেজ প্রশাসন থেকে অনুমতি নেয়া হলো। ববির মৃত্যুর পর পাঁচতলা বিশিষ্ট দালানটার ছাঁদের দরজা সবসময় তালাবদ্ধ থাকে। কলেজ প্রশাসনের উপর ভিষণ চাপ এসেছে অধ্যক্ষের মুখ দেখলেই বোঝা যায়। ছাঁদে যাওয়ার অনুমতি নিয়ে রওনা হলো তারা। দুজনই নিশ্চুপ। ছাঁদের দরজার কাছে এসে ডিবি রাজু নিজেই তালা খুললেন এবং সাজুকে ভেতরে যাবার অনুরোধ করলেন, সাজু ভেতরে ঢোকার পর তিনি প্রবেশ করলেন। ছাঁদের যে পাশটাতে ঘটনাটা তা সাজুর জানা আছে, কেননা ঘটনার দিন ক্লাস থেকে বেড়িয়ে র্দূঘটনার কথা শুনে সেও র্দূঘটনার কথা শুনে ছাঁদে গিয়েছিল। তখন ছাঁদে বেশ ভীড় জমে গেছে। তখনো সে জানে না নিচে যে রক্তাক্ত লাশটির পরে আছে সেটা তাঁরই বান্ধবী ববির। কেউ লাশটি চিনতে পারছিলো না কেননা ছাঁদ থেকে পরার সময় নিচের তলার ছাঁদের কার্নিশের আঘাতে মাথাটা থেতলে গেছে। নিচে গিয়ে লাশটির পাশে রক্ত প্রায় লাল হয়ে যাওয়া হলুদ গোলাপটি দেখে মাটিতে বসে পরে সাজু। কেননা মৃত রক্তাক্ত নিথর দেহটি আর কেউ নয় ওর বান্ধবী ববির। সেদিন সকালে হলুদ গোলাপটি সাজু ববিকে দিয়েছিলো। তারপর আর দেখা হয়নি ববির সাথে। শেষ যখন ওকে দেখলো সাজু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গেছে। ছাদে তেমন কিছুই পাওয়া গেল না। শ্যাওলা ধরা ছাদের উপর দুইজন অনেকক্ষণ যাবৎ পায়চারির পর শুধু ছাঁদের ভাঙা কার্নিশ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া গেলো না। সাজু এবার মুখ খুলল “চলুন যাওয়া যাক।” রাজুও সম্মতি জানালেন “বেশ চলুন।” নামতে নামতে রাজু বলে উঠল “কিছু পেলেন কি?” প্রশ্নের তোয়াক্কা না করে সাজুর জিজ্ঞাসা “প্রমানাদি গুলো দেখা দরকার।” উত্তরে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে আগামীকাল প্রমাণাদি দেখানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানালেন রাজু। এরই মধ্যে সাজু আধিপত্য বিস্তার করে ফেলেছে রাজুর উপর। রাজু যেনো সাজুর অনুগত কর্মচারী। অধ্যক্ষ ও রাজুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে ছাত্রাবাসে ফিরল সাজু।
সাজুর মনে এখন অনেক প্রশ্ন “সাজুকে কে খুন করতে? পারে কেনইবা ওকে খুন করবে কেউ? উপরের ছাঁদের কার্ণিশটা ভাঙা কেনো? ববির শত্রু কে হতে পারে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে ববি কি যেনো বলতে গিয়েও থেমে গিয়েছিলো? কি বলতে চেয়েছিলো সে? ববির কাছ থেকে বারবার জানতে চেয়েও কোন কিছু জানায় নি সে। সকাল বেলা ডিবি রাজুর কাছ থেকে একটা এসএমএস আসলো সাজুর ফোনে “থানাতে চলে আসুন…।” ঝটপট তৈরী হয়ে থানার উদ্দেশ্য রওনা হলো সাজু; থানা পৌঁছে সাজু দেখলো রাজু সাহেব একটা টেবিলে বসে ঝিমুচ্ছেন। সাজুর পায়ের শব্দ পেয়ে মাথা তুলে বলে উঠলেন আপনি চলে এসেছেন? রাজু সাহেব টেবিলের উপর স্বযত্নে তুলে রেখেছেন প্রমাণাদি। সাজু বসতেই ওর দিকে এগিয়ে দিলেন সেগুলো। ব্যাগে হাত দিতেই রাজু সাহেব বলে উঠলেন “ডিটেকটিভ ভায়া একটু সাবধানে।” সাজু মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালো। সাজু প্রথমেই তাঁর নিজের দেওয়া হলুদ গোলাপটা বের করে যা এখন রক্তে আলাদা বর্ণের হয়ে গেছে, এরপর বের করলো ফিতা ছেড়া একটি ডিজিটাল SunStar ঘড়ি কিন্তু এ ঘড়িটি তো ববির নয় এটা নিশ্চয় আততায়ীর। কিছুক্ষণ উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখলো সাজু ঘড়িটাকে তারপর টেবিলে রেখে দিলো। বাঁকি ছিল ছেঁড়া নীল শার্টের হাতা, হাতা বের করতেই হালকা বেলি ফুলের গন্ধ নাকে আসলো সাজুর। শার্টের হাতা বের করে বেশ কিছুক্ষণ উল্টিয়ে পাল্টিয়ে আতশী কাঁচ দিয়ে দেখলো সাজু; দেখতে দেখতে হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে থানা থেকে বাইরে দৌড় দিলো, রাজু এতোক্ষণ হা মেলে সাজুর কান্ড দেখছিলো। হঠাৎ সাজুর উঠে যাওয়ায় তিনিও মন্ত্রমুগ্ধের মতো সাজুকে অনুসরণ করলেন। রিক্সা নেওয়া হলো ঘোরা শুরু হলো প্রতিটি ঘড়ির দোকান কিন্তু কোনো লাভ হলো না কোনো দোকানিই রশিদ দিয়ে ঘড়ি বিক্রয় করেন না। সাজু কয়েকটা দোকানিকে ঠিক মতো শাষানিও দিলো। এদিকে শহরের সকল দোকান ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আজকের সূর্যাস্তের মধ্যে দিয়ে ববির মৃত্যুর সপ্তাহ পার হলো। কেসের কোনো সুরাহা হয়নি তবে সাজুর এ বিষয়ে ভিষণ জেদ চেপেছে বলায় যায় অপরাধীর আর নিস্তার নেই। সন্ধ্যা হওয়ার রাজু সাহেব থানাতে চলে গেলেন সাজুও ছাত্রাবাসের দিকে পদব্রজে রওনা হলো। বিবিধ প্রশ্ন ওর মাথা ঘোলাটে করে তুলেছে হঠাৎই মনে হলো ববির ফোনটা তো দেখা হয়নি। উত্তেজনায় মাথাটা গুলিয়ে যাবার উপক্রম। হঠাৎ পেছন থেকে মাথায় লাঠির আঘাতে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারালো সাজু সাজুর মনে হচ্ছিল এইবুঝি সব শেষ হয়ে গেলো? জ্ঞান হারাতে হারাতে নাকে ভেসে এলো কড়া বেলি ফুলের গন্ধ…। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন সাজু নিজেকে হাসপাতালে আবিস্কার করলো। বিছানার পাশে বসা রাজু হাসতে হাসতে বলে উঠলো সাজু সাহেব কেসটা যে অসমাপ্ত রয়ে গেলো। তিনি আরো বললেন “মশাই বড়ো বাঁচা বেঁচেছেন, গতকাল আপনার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোক আপনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে।” সাজু মুচকি হেসে উঠে বসতে চাইলো কিন্তু মাথার ব্যাথাকে অগ্রাহ্য করে উঠতে পারলো না। শুয়ে থেকেই রাজু সাহেবকে বললেন “ববির ফোনটা কোথায়?” রাজু সাহেব পকেট থেকে পলিথিনে মোড়ানো নোকিয়া এক্সপ্রেস মিউজিক সেটটি বের করে সাজুর হাতে দিলেন ফোন অন করলো সাজু উদ্দেশ্য ড্রাফট চেক করা কেননা ববি ওর কথা গুলো ড্রাফটে সেভ করে রাখতো যাই মনে আসুক না কেনো। ফোন অন হতেই একটি মেসেজ এর ডেরিভারি রিপোর্ট মোবাইল স্কিনে ভেসে উঠলো ববি মেসেজটা পাঠিয়েছিলো সাজুকে যা কেবল সেন্ট হলো। সাজুর ফোন বেজে উঠলো। এসএমএস ওপেন করলো সাজু দেখলো এসএমএস লেখা আছে 53367777 ডিবি রাজুর চোখ ছানাবড়া কিন্তু সাজুর চোখ আনন্দে চকচক করে উঠলো। এবার উঠে দাড়ালো সাজু, যদিও তাঁর মাথাটা চিঁনচিঁনিয়ে ব্যাথা করছে তাঁর কিন্তু সে আর বিছানায় নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না। বেড়িয়ে পড়লো দুইজন গন্তব্য টেইলার্সের দোকান শার্টের হাতাতে লেখা টি.টি এর অর্থ খুঁজতে। তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর অবশেষে পাওয়া গেলো টি.টি এর খোঁজ। T.T এর অর্থ হলো টিপু টেইলার্স।
টেইলার্সের মালিক টিপুকে সাজু জিজ্ঞেস করলো এখানে গত ১৫ দিনের মধ্যে জেমস নামের কেউ নীল শার্ট বানিয়ে নিয়েছে কিনা। মালিক টিপু সাজু ও রাজুর মুখের দিকে তাকিয়ে বিনা বাক্য ব্যয়ে রেজিস্টার খাতা ঘেঁটে জেমস খান নামের এক ভদ্রলোকের ঠিকানা বের করে দিলেন। ঠিকানা দেখে তো সাজু হতবম্ভ একি! এযে ববির বাড়ির ঠিকানা মুখে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো তাহলে জেমস কি ববির ছোট ভাই জাহাঙ্গীর। রাজু বলল কিন্তু জাহাঙ্গীর কেন..। কথা থামিয়ে দিয়ে সাজু বলল চলুন মশাই সব জট আজ খুলে গেছে থানাতে একটা ফোন করে এসআই রফিককে আসতে বলুন দলবল সমেত। যখন ওরা ববির বাড়ি পৌঁছালো তখনো কড়া বেলি ফুলের গন্ধে বাড়ি মৌ মৌ করছিলো। বাড়িতে উপস্থিত সবাইকে ডাকা হলো জাহাঙ্গীরও এসে বসল চোখেমুখে চাপা উত্তেজনা। ববির বাবা-মা বলল কোনো সমাধান হলো কি বাবা সাজু? সাজু বলল এখনই হবে সমাধান? জাহাঙ্গীর বলল কে কে খুন করেছে আপাকে? সাজু লাফ দিয়ে উঠে জাহাঙ্গীর এর কলার ধরে একটা কষে চড় মেরে মেঝেতে ফেলে দিলো ওকে, তারপর বলল এইমাত্র যাকে চড় মারলাম সে। ক্রোধে চিৎকার উঠল সাজু “বল ক্যানো খুন করেছিস ববিকে”। জাহাঙ্গীর ওরফে জেমস হাওমাও করে কেঁদে উঠল, কিন্তু কিছুই বলল না। ততক্ষণে পুলিশ এসে গেছে সাথে এসআই রফিক। সাজু বলা শুরু করলো সেদিন আমি যখন ক্লাসে যাই তখন ববি ক্লাসে ছিলো না যদিও ব্যাপারটি তেমন গুরুতর ছিলো না, কিন্তু কিছু পরে যখন ববিকে মৃত অবস্থায় দেখি তখন ভেবে পাচ্ছিলাম না এটা কে করতে পারে, কেননা ওর আত্মহত্যা করাটা অস্বাভাবিক। যখন থানাতে প্রমাণাদি দেখলাম তখন নীল শার্টের ছেঁড়া হাতাতে ড্রয়িং রুমে পাওয়া বেলি ফুলের গন্ধ পেলাম; আবার সেই গন্ধ পেলাম আমাকে যখন আঘাত করা হলো রাস্তাতে..। ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে যাই যদিও রাজু সাহেবকে আমি ব্যাপারটা বলিনি, শেষ প্রমাণ পেলাম ববির ফোন থেকে আসা এসএমএস আর টেইলার্সের দেওয়া ঠিকানা থেকে। রফিক সাহেব এতোক্ষণ চুপ করে ছিলেন এবার বলে উঠলেন তা হয় বুঝলাম কিন্তু জাহাঙ্গীর ওর বোনকে মারতে যাবে কেনো। কারণ হলো সম্পত্তি, ববির মৃত্যুর পর এই সম্পত্তির মালিক একমাত্র জেমস। ববি ছিলো ওর বাবার প্রথম পক্ষে মেয়ে মায়ের সকল সম্পতি ববির মা মৃত্যুর আগে ওকে উইল করে দিয়ে যায়। উইলে উল্লেখ ছিলো যদি ববি কোনো র্দূঘটনায় মারা যায় তাহলে সে সম্পতি পরবর্তী উত্তরাধিকারী পাবে সকল কিছু আর তাই এতোসব। শুরুতে খুব গোলমেলে হয়ে গেছিলো কেসটা ঘড়ির দোকান খুঁজে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম কিন্তু শার্টের নীল ছেঁড়া হাতায় থাকা বেলি ফুলে গন্ধ শেষ পর্যন্ত সফলকাম হলাম আমরা। সাজুর কথা শেষ হতেই রাজু সাহেব বলে উঠলো ধন্যবাদ সাজু ভাই আপনার সাথে কাজ করে ভালো লাগলো ভবিষ্যতে কেনো প্রকার সাহায্য লাগলে জানাবেন। এসআই রফিক সাহেব ততক্ষণে লোভী, খুনী জেমস ওরফে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে থানার পথে রওনা হয়েছেন। খুনি জেমস যথোপযুক্ত শাস্তি পায় আদালত ওকে যাবৎ জীবন স্বশ্রম করাদন্ড দেয়। এ খুনের সমাধানের মধ্যে দিয়ে সাজুর বেশ নামডাক হয়; বিভিন্ন জায়গাতে থেকে নানা কেসে ডাক আসে; ওর সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয় কিন্তু ববির সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা ভেবে সে এখনো দারুনভাবে ওর শূণ্যতা অনুভব করে।
মো. আরমান হোসেন
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
আলোর সন্ধানে নওগাঁ।