জান্নাতের এগিয়ে চলা!
|মানুষ যখন দারিদ্রতার কষাঘাতে নিষ্পেষিত তখন স্বপ্ন বলে কিছু থাকে না। স্বপ্ন তখন নির্লিপ্ত এক আবেশের নাম। তাহলে কি ওদের স্বপ্ন থাকতে নেই? হয়তো এক বাক্যেই বলবেন যাঁদের পেটে দুবেলা দুমুঠো ভাত জোটে না তাঁদের আবার স্বপ্ন কিসের? সেই পরিবারের স্বপ্ন দেখার যোগ্যতাও নেই! স্বপ্ন অর্থ দিয়ে নয় স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছা শক্তির প্রয়োজন। কেননা বড়ো হওয়ার ইচ্ছা শক্তিই মানুষকে বড়ো করে তোলে। পরিচয় করিয়ে দিতে চাই এমনই একটি স্বপ্নের লালনকারীর সাথে, যার নাম হুরায়া জান্নাত। জান্নাত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলাধীন জি.এম আইডিয়া স্কুল এর নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। দরিদ্র পরিবারের অভাবে জন্মের পর থেকেই নিপীড়ন দেখে বড়ো হয়েছে সে। বাবা দিন মজুর। বছরের প্রায় সময় খাদ্যভাবে অর্ধাহারে অনাহারে থাকতে হয়। চার সদস্যের পরিবারের জান্নাত বাবা-মার বড়ো সন্তান। জান্নাত যখন ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত তখন মায়ের কিডনির রোগ ধরা পরে। দিশেহারা হয়ে পরে জান্নাতে বাবা দেলওয়ার হোসেন। নিজের প্রাণের সহধর্মীনির জীবন বাঁচানো চেষ্টায় সন্তানদে র পড়াশুনা তখন বন্ধ হওয়ার জোগার হয়। সেই তখন থেকে যুদ্ধ শুরু জান্নাতের। অন্যের জমিতে আলু, সরিষা সহ বিভিন্ন ফসল তোলার কাজ করে শিক্ষার খরচ জোগাত জান্নাত। কিন্তু এভাবে আর কত? আর পারছিলো না জান্নাত! পড়াশুনা বন্ধ হবার আশঙ্কায় জান্নাত ভেঙে পড়েছিলো। এমতাবস্থার জান্নাতের পাশে দাঁড়ায় আলোর সন্ধানে নওগাঁর বন্ধু সংগঠন আলোর সন্ধানে সান্তাহার ও সান্তাহার সরকারি কলেজ রোভার গ্রুপ, বগুড়া। ৭ ফেব্রুয়ারি সেবামূলক ছাত্র সংগঠন আলোর সন্ধানে’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো. আরমান হোসেন এর উপস্থিতিতে জান্নাতে পড়াশুনার দায়িত্ব গ্রহন করে আলোর সন্ধানে সান্তাহার। প্রয়াসটি অতি ক্ষুদ্র কিন্তু এগিয়ে চলার শুরুটা আশায় উজ্জ্বল নতুন আগামীর। উল্লেখ্য ২০১৩ সালে একজন হত দরিদ্রকে কাফনের কাপড় কিনে দেয়ার মাধ্যমে আলোর সন্ধানে’র যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে বিভিন্ন সেবামূলক কাজসহ বর্তমানে ৬জন শিক্ষার্থীর পড়াশুনার ব্যয়ভারসহ ৫জন যুবককে কম্পিউটার প্রশিক্ষণে সহায়তা প্রদান করছে সংগঠনটি। সম্প্রতি নওগাঁস্থ বড় মহেশপুর আদিবাসী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলাধূলার উপকরণ বিতরণ করে সংগঠনটি। তাই মানবতায় এগিয়ে আসুন এই সংগঠনটির সহায়তায়, যাতে সংগঠনটি জান্নাতদের পথচলাতে সহযোদ্ধা হতে পারে। এটি মানবিক দাবী আপনি চাইলেই পারবেন জান্নাতদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে। শুভ শক্তির জয় হোক; ভালো মানসিকতার উত্থান হোক।