আপনি কি সাইবার বুলিংয়ের শিকার?
তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন জীবন সহজ করেছে তেমনি এর বহুল ব্যবহারে বেড়েছে অসংগতি। বর্তমানে সবার হাতেই স্মার্ট ডিভাইস যার মাধ্যমে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনাগোনা। যুগের চাহিদায় ইন্টারনেটের সর্বত্র! ইন্টারনেটের এই ব্যবহারে প্রতিনিয়িত মানুষ স্বীকার হচ্ছে “সাইবার বুলিং” এর। সাইবার বুলিং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
সাইবার বুলিং:
সাইবার বুলিং- ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাউকে বিভিন্নভাবে বিরক্তিকর বা বিব্রতকর এমন কিছুর প্রকাশ যা সম্মান নষ্ট করার এক নিকৃষ্ট প্রচেষ্টা। এই বুলিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার হলে, সেটাকে সোশ্যাল মিডিয়া বুলিং বলা হয়।
বুলিং বিভিন্নরকম হতে পারে:
কারোর পোস্টের্ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা।
কারো আপত্তিকর ছবি পোস্ট করা।
কোনো ব্যক্তিকে উত্যক্ত করা।
মেসেঞ্জারে কাউকে হুমকি দেয়া।
কাউকে অবমাননা করে তার অ্যাকাউন্টের ওয়ালে ছবি পোস্ট করা বা তাকে নিয়ে লেখা।
কারোর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা এবং ওই একাউন্ট থেকে ঐ ব্যক্তির মানহানি হতে পারে এমন বিষয়বস্তু পোস্ট করা ইত্যাদি।
কেন হয় বুলিং?
অপরাধপ্রবণতা কারণে অপরাধীর হয়ে ওঠে মানুষ। অপরাধের জন্য তেমন জোরদার কারণ প্রয়োজন নেই। যার মানসিক প্রবণতা আছে সে যেকোনো কারণ তৈরি করে নিয়েই অপরাধ ঘটাবে! গবেষণায় জানা গেছে, মানসিকভাবে দুর্বল এবং হীনমন্য মানুষেরা অন্যকে ছোট করতে অযথাই এমন আক্রমণ করে থাকে। আর তাই, সাইবার বুলিং জিনিসটা জোরদার উপায়ে ঠেকানোটা সম্ভব নয়।
কোন কোন মাধ্যমে চলছে বুলিং?
আমাদের বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফেসবুক রয়েছে সাইবার বুলিংকারীদের পছন্দের শীর্ষে! ফেসবুকের সহজলভ্য এবং সুবিধাজনক ব্যবহারই এর মূল কারণ। ফেসবুকের অ্যাকাউন্ট নেই এমন মানুষের সংখ্যা এখন খুবই কম। অপরাধপ্রবণ বিকৃত মনের অসংখ্য মানুষও স্বভাবসিদ্ধভাবে অ্যাকাউন্ট খুলে রেখেছে। এখানে তাদের সময় কাটানোর অন্যতম প্রিয় উপায় হলো অন্যকে উত্যক্ত করা! এছাড়াও টুইটার, স্ন্যাপচ্যাট, আস্ক এফএম বা ছবি শেয়ার করার জনপ্রিয় মাধ্যম ইন্সটাগ্রাম, সোশ্যাল মিডিয়া বুলিং অহরহ চলছে এসব জায়গায়। একজন নিরীহ মানুষ বুলিংয়ের শিকার হতে পারে যেকোনো সময়, যেকোনো মাধ্যমেই।
সাইবার বুলিংয়ে করণীয়ঃ
সাইবার বুলিং’ হচ্ছে অনলাইনে কোনো প্রলুব্ধ বা হেয় প্রতিপন্ন করা, ভয় দেখানো এবং মানসিক নির্যাতন করা। এ ধরনের কাজে জড়িত থাকে ভেবে বুলিং সংজ্ঞায়িত করা হলেও পরে দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে স্বনামে বা ফেক আইডির আড়ালে প্রাপ্তবয়স্ক অনেকেও এ ধরনের হীন কাজে জড়িত থাকে।সাইবার বুলিংয়ের ঘটনা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ঘটলেও ফোনে কিংবা ইমেইলেও হতে পারে। ক্রমবর্ধমান চাপে হতাশা, লেখাপড়ার প্রতি অনীহা, ইনসমনিয়া থেকে শুরু করে আত্মহত্যার প্রবণতা পর্যন্ত তৈরি হতে পারে। সাইবার বুলিং প্রতিরোধে এ বিষয়ে মা-বাবার ধারণা থাকা, সন্তান ইন্টারনেটে (কম্পিউটার এবং মোবাইলে) কী করছে তা জানা এবং সন্তানদের সাথে বন্ধুসুলভ সুসম্পর্ক বজায় রাখা উচিত।
টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের দেয়া তথ্য মতে, দেশের তিন-চতুর্থাংশ নারীই সাইবার নিপীড়নের শিকার। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এদের মধ্যে মাত্র ২৬ শতাংশ অনলাইনে হেনস্থার বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে অভিযোগ করে এবং অন্যরা সামাজিকতার ভয়ে গোপন রাখে।সাইবার বুলিং প্রতিহতে করণীয়সমূহ সাইবার বুলিং প্রতিহত করতে সবার আগে হতে হবে সন্তানের বন্ধু। সাইবার বুলিং কী, অপরিচিত বা অনলাইন বন্ধুরা কেন অনিরাপদ এবং তাদের সাথে কেন ব্যক্তিগত কিছু শেয়ার করা যাবে না। সম্ভব হলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে সন্তানদের সাথে যুক্ত থাকতে হবে। সর্বোপরি সন্তানরা যাতে ইন্টারনেটে সুরক্ষিত থাকে তার ওপর নজর রাখতে হবে।
হয়রানির স্বীকারদের করণীয়:
হয়রানির শিকার যে কেউ সরাসরি বিটিআরসিতে যোগাযোগ করতে পারেন। বিটিআরসি ফোনে ও ইমেইলে দুইভাবেই অভিযোগ গ্রহণ করে থাকে। বিটিআরসির কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্স রেসপন্স টিম এ ধরনের সমস্যায় সহায়তা করে থাকে। বিটিআরসিতে হয়রানির অভিযোগ জানাতে কল করতে পারেন (০২)৭১৬২২৭৭ নম্বরে বা ইমেইল পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
সম্পাদনা:
মো. আরমান হোসেন
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
আলোর সন্ধানে
Share this:
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to share on Tumblr (Opens in new window)
- Click to share on Pinterest (Opens in new window)
- Click to share on Pocket (Opens in new window)
- Click to share on Reddit (Opens in new window)
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
- Click to email a link to a friend (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)
Related
Related Posts
- রক্তদান নিয়ে কিছুৃ কথা… No Comments | May 16, 2017
- বয়ঃসন্ধি বিষয়ক অ্যাপস No Comments | May 11, 2017
- বয়ঃসন্ধি’র অ্যাপস তৈরীর কাজ চলছে… No Comments | Mar 3, 2017
- শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে আলোর সন্ধানে’র চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা No Comments | Nov 27, 2015